ট্রেনেই হুলস্থুল। মাস্তি আর মজায় মজয়ায় ছুটে চলে এই বহু চাকার গাড়ি। পাহাড় কেটে তৈরি এই পথের লক্ষ্য একটাই।
রিও দে জেনেইরো… নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক বিশাল মূর্তি। পাহাড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে, দু’হাত মেলে যেন সবাইকে আলিঙ্গন করছে। ব্রাজিলের অমর প্রতীক ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার।
ভক্সপপ
দীর্ঘদিনের অপেক্ষা আর চেষ্টার পর ধরা দেয় এই যিশু অবয়ব। যে উঁচু পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে যেনো আগলে রেখেছে পুরো রিও ডি জেনিরো শহরটাকে।
দু’হাত প্রসারিত করে রাখা যিশুর অদৃশ্য আলিঙ্গন পেতেই এখানে প্রতিদিন ভিড় করে হাজারো মানুষ। কেউ হয়তে যিশুর সামনে দাঁড়িয়ে কায়মনোবাক্যে কিছু চান, কারো কাছে হয়তো এটা নিছক বিনোদন।
তবে এই যিশু মূর্তি এখন এক উৎসব কেন্দ্র। মানুষ এখানে ভিড় করেন পাহাড় ট্রেক করে এক অনন্য প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার জন্য। যেখানে চলে রোদ আর মেঘের খেলা। আলো ঝলমলে দুপুর হঠাৎ ঢেকে যায় মেঘের চাদরে। মেঘ ছুঁয়ে যায় মানুষের চোখ। হয়তো এমন দৃশ্যে কারো কারো বুকের মাঝে হঠাৎ বৃষ্টিও নামে।
১৯২২ সাল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বজুড়ে যেন নেমে এসেছে এক ‘অবিশ্বাসের স্রোত’। সেই সময় রিওর ক্যাথলিক চার্চ সিদ্ধান্ত নেয় শহরের ওপর পাহাড়চূড়ায় যিশু খ্রিস্টের এক বিশাল মূর্তি দাঁড় করানো হবে, যেন তিনি সবসময় নজর রাখেন নগরবাসীর দিকে।
অবশেষে ১৯৩১ সালের ১২ অক্টোবর উদ্বোধন হয় ক্রাইস্ট দ্য রিডিমারের। উচ্চতা ৯৮ ফুট, বাহুর দৈর্ঘ্য ৯২ ফুট। মুহূর্তেই রিওর প্রতীকে পরিণত হলো।
প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ আসেন এই পাহাড়ে। কারও কাছে এটি ধর্মীয় তীর্থস্থান, কারও কাছে স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত। অনেকেই আবেগে কেঁদে ফেলেন। শুধু পর্যটক নয়, স্থানীয় কারিওকাদের কাছেও এই মূর্তি যেন পরিবারের সদস্য।
